পুলিশের সাথে আসামি ঘুরছে, গ্রেপ্তার করছে না
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৪, ১৪:০১
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের ২৫ বছর বয়সী নূরে আলম। এই যুবকের উচ্চতা ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি। তাকে বলা হতো জেলার সবচেয়ে বেশি উচ্চতার মানুষ। সেই নূরে আলমের আত্মহত্যার এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো কোন আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। ফলে পরিবারসহ এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছেন। বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে তারা দাবি করেন, পুলিশের সঙ্গে আসামি ঘুরছেন, কিন্তু তারা ধরছে না। তাই আমারা মানববন্ধন করছি।
সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের দুল্লার বাজার এলাকায় নূরে আলমের আত্মহত্যাকে হত্যা দাবি করে সেই মামলায় জড়িতদের ব্যাক্তিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসি দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে তার পরিবার ও এলাকাবাসী।
নিহত নূরে আলম ওই এলাকার মৃত নওশের আলীর ছেলে। স্থানীয়রা তাকে লারকা নামেই চেনেন। তিনি স্থানীয় কাকিনা বাজারে নরসুন্দরের কাজ করতেন।
এদিকে দুপুরে মানববন্ধনে অংশ নেয়া শতাধিক মানুষরা বিক্ষোভ মিছিল করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহির ইমাম ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামি গ্রেপ্তার ও নূরে আলমের স্ত্রীকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিলে মানববন্ধন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন।
মানববন্ধনে অংশ নেনা নানা শ্রেণি-পেশার শতাধিক মানুষরা জানান, গত শনিবার (২৫ফেব্রুয়ারি) উপজেলার কাকিনা বাজারে সেলুনের কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে বাড়ির পাশে দুল্লার বাজারে একটি মোটরসাইকেল রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখেন নূরে আলম। পরে ৩০ মিনিটের মতো সেখানে অপেক্ষা করে কাউকে দেখতে না পেয়ে সেই মোটরসাইকেলটি বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর রোববার সকালে গাড়ির মালিক আসাদুল মোটরসাইকেলটি নিতে তার বাসায় যান এবং তাকে মিষ্টি খাওয়ার জন্য পাঁচ হাজার টাকা দেন। পরে কৌশলে তাকে দুল্লার বাজার ক্লিনিকের সামনে নিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন এবং তাকে দেয়া সেই ৫ হাজার টাকা কেড়ে নেন। এ ঘটনার জেরে রাগে-অভিমানে নূরে আলম বাজার থেকে বিষ কিনে বাসায় গিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এ অবস্থায় পরিবার কালীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলেও এখনো তাদের কোন গ্রেপ্তার করছে না। পুলিশের সঙ্গে আসামিরা বসে চা খাচ্ছে অথচ তাদের ধরার কোন নাম নেই। আমরা দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি করছি।
মানববন্ধনে কান্না জড়িত কন্ঠে নূরে আলমের স্ত্রী তাহমিনা বলেন, দুধের শিশুকে নিয়ে আমি থানাসহ পুলিশের কাছে ঘুরছি। কিন্তু আসামি ধরার কথা বললেও তারা কোন কথা বলছে না। বিচার না পেয়ে আজ আমি রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। আমি দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।
ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে নুর আলমের মা বলেন, বাজারে সেলুনে সে নরসুন্দরের কাজ করতো। কখনো কারো সঙ্গে ঝগড়া করেনি। কিন্তু আমার ছেলেকে চোরের অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে নির্যাতন করেছে। এ ব্যাথা সইতে না পেরেই সে মারা যায়। আমার মত কোন মায়ের কোল যেন খালি না হয় প্রশাসনের কাছে আমি বিচার চাই।
বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ